জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অদ্ভুত শর্ত, ভর্তি হতে পারছেন না ছাত্রীরা

সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও ডিগ্রী ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও এবছর ভর্তি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
টাঙ্গাইলের সখীপুর সরকারি মুজিব কলেজ এর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার প্রচলন চালু হয়েছে শুরু থেকেই। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদনাদায়ক এক অদ্ভুত শর্তের কারণে এই কলেজে স্নাতক সম্মান শ্রেনীতে কোন ছাত্রী ভর্তি হতে পারেন না এনিয়ে কলেজের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সহ স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারি মুজিব কলেজের শিক্ষক–শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মুজিব মহাবিদ্যালয় নামে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে প্রতিষ্ঠিত এটিই প্রথম কলেজ বলে দাবি করেন স্থানীয় লোকজন।
পরে ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর কলেজটি সরকারীকরণ করা হয়। এর আগে ২০১২ সালের ৫ জুলাই সমাজকর্ম ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি পায়।
কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই স্নাতক (সম্মান) শিক্ষা কার্যক্রমের অধিভুক্তিপত্রে শুধুমাত্র ছেলে শিক্ষার্থী ভর্তি করার শর্ত দেওয়া হয়। ওই শর্তের কারণেই স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারছেন না মেয়ে শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা নুরুল ইসলাম সাগর তার মেয়েকে সরকারি মুজিব কলেজ ভর্তি করাতে চান। সম্প্রতি সে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে সে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হতে ইচ্ছুক।
কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অদ্ভুত সিদ্ধান্তের কারণে তিনি তার মেয়েকে বিদ্যালয় ভর্তি করতে পারেননি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এটা কোন নিয়ম হলো নাকি যে কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করল সেই কলেজের স্নাতক চালু থাকলেও মেয়েরা ভর্তি হতে পারছে না এই আধুনিক যুগে এমন বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না। তিনি এই আজব শর্তের তীব্র নিন্দা জানান।
কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর সদর উদ্দিন আহমেদ বলেন আমি কনডম পরার পদ্ধতি জেনে অবাক হয়েছি। এই কলেজে অনুষ্ঠিত ছেলেমেয়ে একসঙ্গে পড়াশোনা করছে শুধুমাত্র স্নাতকে মেয়েরা ভর্তি হতে পারছে না।
একটি নারী শিক্ষার জন্য বিরাট একটি বাধাস্বরূপ। কলেজ কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করছেন তবে কোনো কাজ হয়নি।
সদর উদ্দিন আহমেদ আরো জানান যে কলেজে আরো ১১ টি বিষয়ে স্নাতক কোর্স খোলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সুতরাং স্নাতক কোর্সে মেয়েদের ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হলে স্থানীয় ভাবে তারা সফল হবে বলে।